হাবিপ্রবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের অন্যতম সবুজ ক্যাম্পাস দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। গাছ গাছালিতে সাজানো এই ৮৫ একরের এই ক্যাম্পাসের নেপথ্য নায়ক বৃক্ষপ্রেমী অধ্যাপক টিএমটি ইকবাল চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁর পুরো নাম তালুকদার মোহাম্মাদ তৌহিদুল ইকবাল।
বরেণ্য এই অধ্যাপক আজ (৬ জুন) আনুমানিক বিকাল ৩ টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার মৃত্যুতে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।
লাল-সাদা রঙের ইটের ভবনগুলোর মাঝে সবুজ গাছ পালার সমারোহ অনিন্দ্য সুন্দর করেছে এই ক্যাম্পাসকে। এই ক্যাম্পাসে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ফল, ঔষধি, ফুলসহ কয়েকশ জাতের বৃক্ষ। ক্যাম্পাসের গাছের কথা উঠলেই সবার প্রথমেই যেই মানুষটির কথা আসবে তিনি হলেন অধ্যাপক টি এম টি ইকবাল। এসব বৃক্ষের প্রায় ৯০ ভাগই রোপণ করেছিলেন তিনি। অসাধারণ এই বৃক্ষপ্রেমী মানুষটি ১৯৯৫ সালে পটুয়াখালী কৃষি কলেজ থেকে বদলি হয়ে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন তৎকালীন হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজে। হাজী মোহাম্মদ দানেশ কৃষি কলেজ থেকে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সবুজায়ন করতে তিনি পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগিয়ে গেছেন। তিনিই প্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। তিনি শুধু নিজে বৃক্ষরোপণ করেননি শিক্ষার্থীদেরও প্রতিনিয়ত বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করতেন। শুধু বৃক্ষরোপণ নয় পরিচর্যাও করেছেন তিনি।
অধ্যাপক টিএমটি ইকবাল ২০২১ সালে অবসররোত্তরকালীন (পিআরএল) ছুটিতে এবং ২০২২ সালের জুলাইয়ে অবসরে যান। অবসর পরবর্তী রংপুরের তিস্তা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা শুরু করেন। এরই মাঝে গত পরশুদিন ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষণিক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কিছুটা সুস্থতা অনুভব করলে তাঁকে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ তাকে ঢাকায় নেয়া হলে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৬৮ বছর।
উল্লেখ্য, মরহুমের ১ম জানাজা আজকে এশার নামাযের পর বাইতুল আমান জামে মসজিদ, ৫ নং রোড, ৯ নং সেক্টর, উত্তরা, ঢাকা অনুষ্ঠিত হবে এবং ২য় জানাজার নামায আগামীকাল জুম’আর নামাযের পর মালশাপাড়া ( বাজার স্টেশন ), সিরাজগঞ্জ শহর অনুষ্ঠিত হবে। জানাযার পর মরহুমকে মালশাপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে।