নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাইমস হায়ার এডুকেশন র্যাংকিং ব্যবস্থায় বাংলাদেশের স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় । বিশ্ব র্যাংকিং-এ বশেমুরকৃবি’র অবস্থান শ্রেষ্ঠ ৮০১-১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি। তবে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ৮০০–এর তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। এই তালিকার বাইরে দেশের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। তালিকায় জায়গা পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ১৭টি সরাসরি র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা পেয়েছে। বাকি সাতটি রিপোর্টার হিসেবে তালিকায় জায়গা পেয়েছে।
র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ৮০১ থেকে ১০০০–এর মধ্যে আছে দেশের ৫ বিশ্ববিদ্যালয়। এ তালিকায় দেশসেরা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এরপর ৮০১ থেকে ১০০০–এর মধ্যে আছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি।তালিকার ১০০১–১২০০–এর মধ্য থাকা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, চুয়েট, কুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ১২০১–১৫০০–এর তালিকায় আছে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ; খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৫০১ থেকে পরে ধাপের তালিকায় আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
টাইমস হায়ার এডুকেশনে দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জায়গা পাওয়ায় সহকর্মীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ওয়ার্ল্ড একাডেমী অব সায়েন্স এবং বাংলাদেশ একাডেমী অব সায়েন্স এর ফেলো অধ্যাপক ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম।
অধ্যাপক ইসলাম জানান, সুসংবাদ পাওয়ার পর আমার গবেষণা দলের উদ্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে এক অনানুষ্ঠানিক সেলিব্রেশন আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থী, ডিন ও শিক্ষকগণ আমাদের মিষ্টি মুখ ও কফি আড্ডায় যোগ দেন এবং বিকেলটা স্মরণীয় করা হয়। আশার বিষয় হচ্ছে, গত এক দশকে বশেমুরকৃবিতে এক ঝাঁক অপেক্ষাকৃত তরুণ গবেষক নিয়মিত উঁচু মানের গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে আসছে, যা এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সামনের দিনে আরও অগ্রসর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করি
তিনি আর বলেন, দেশের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান লাভে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রকাশনার উৎকর্ষতা ও অন্যান্য স্কলারলি কর্মকান্ড নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছে। বশেমুরকৃবি পরিবারের সবাইকে এ অনন্য অর্জনের জন্য অভিনন্দন। এ কৃতিত্ব অর্জনে আমার গবেষণা দলের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আমার গবেষণাদল প্রতি বছরে ৩০-৪০ টি গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে প্রকাশ এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন বশেমুরকৃবির এ গৌরবোজ্জ্বল কৃতিত্ব অর্জনে অবদান রেখেছে। আমি এই গবেষণা দলের একজন কর্মী হিসেবে বশেমুরকৃবি এই অর্জনে ভীষণ খুশি। এ শুভক্ষণে আমি আমার পোস্টডক্টরাল ফেলোগণ, পিএইচ ডি ও মাস্টার্স ছাত্রছাত্রীবৃন্দ এবং সকল কোলাবোরেটরগণকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি।
বর্তমানে আমার টিমে কয়েকজন ফ্যাকাল্টি সদস্য, ২ জন পোস্টডক, ৫ জন পিএইচডি এবং ১০ জন এমএস ছাত্রছাত্রীসহ বেশ কয়েকজন ইন্টার্নস এবং রিচার্স ফেলো নিরলসভাবে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, জাপানসহ অনেক দেশে আমাদের রয়েছে অনেক কোলাবোরেটরস। বর্তমানে আমরা গেটস ফাউন্ডেশন, ব্রিটিশ এফসিডিও, বাস-ইউএসডিএ, কেজিএফসহ অন্যান্য সংস্থার অর্থায়নে আমাদের ৫টি গবেষণা প্রকল্প চলমান। আমরা যৌথ গবেষণাকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল মনে করি এবং দেশের প্রাধিকারভিত্তিক মৌলিক এবং প্রায়োগিক গবেষণায় ফ্রন্টিয়ার প্রযুক্তি যেমন জিনোমিক্স, জিনোম এডিটিং, কম্পিউটেশনাল বায়োলজি, ন্যানো-বায়োটেকনোলজি ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি।
আমি মনেকরি, সঠিক পরিকল্পনা ও নেতৃত্বদানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকগণ এবং বশেমুরকৃবির পরিবারের সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে দেশের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একদিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৫০০ শত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্তরভুক্ত করা সম্ভব। তবে সেজন্য বশেমুরকৃবি পরিবারের সকলের অঙ্গীকার, সঠিক পরিকল্পনা, নেতৃত্ব এবং সর্বোপরি সকলের কঠোর পরিশ্রম একান্ত প্রয়োজন।
উল্লেখ্য যে, বিগত বছরের ন্যায় এই বছরেও অধ্যাপক ইসলাম এলসিভিয়ার (২%) এবং এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স কর্তৃক প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। অন্যদিকে ২০২১ সালে সিমাগো র্যাংকিং এ দেশের মধ্যে প্রথম স্থান ও চলতি বছরে উরি র্যাংকিং-এও দেশের বিশ্ববিদ্যালগ্যলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।
You must be logged in to post a comment.