সিদ্দিকুর রহমান শাহীন,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকায় একটি পরিবার ঘর নির্মাণে বাধার মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক পিলার নং ৯৪৬ এর সাবপিলার ২ এর কাছে বসবাসকারী আব্দুল মালেকের পরিবার বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আব্দুল মালেক, তার স্ত্রী ছালমা, দুই ছেলে দুলাল ও মিলন মিলে ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। তাদের একমাত্র আয়ের উৎস এই চাকরি। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া মাত্র ০.০৫ শতক জমির ওপর একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে তারা কাজ শুরু করেছিলেন। ঢাকায় কষ্টার্জিত অর্থ জমিয়ে তিনটি কক্ষের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে আসার সময় ২১ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। বিএসএফ জানায়, সীমান্ত থেকে ৭০ গজের ভেতরে কোনো পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। বর্তমানে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় পুরোনো ঘর ভেঙে নতুন ঘর নির্মাণ করতে না পারায় পরিবারটি প্রচণ্ড শীতে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।
দুলাল জানান, “অনেক কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে একটি বিল্ডিং ঘর নির্মাণ করছিলাম। কিন্তু বিএসএফের বাধার কারণে এখন আর কোনো কাজ করতে পারছি না। আমাদের সব টাকা এই ঘরে বিনিয়োগ করেছি। এখন আমরা খোলা আকাশের নিচে থাকতে বাধ্য হচ্ছি।”
দুলালের স্ত্রী ছালমা বলেন, “আমাদের আর কোনো জমি নেই যেখানে নতুন বাড়ি নির্মাণ করতে পারি। যা আছে, সেটুকুতেই ঘর তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএসএফের বাধার কারণে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।”
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “বিএসএফ ঘর নির্মাণে বাধা প্রদান করায় আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।”
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অনন্তপুর বিওপি’র নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, “বিএসএফের বাধা এবং সীমান্ত থেকে ৭০ গজের মধ্যে নির্মাণ কাজ হওয়ায় সেটি বন্ধ রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি।”
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবারটির মানবেতর অবস্থার দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।