যেভাবে যাত্রা শুরু হয় গ্রীন ভয়েস বহ্নিশিখার

প্রকাশ:

Share post:

বহ্নিশিখা: ইতিহাস থেকে আমরা শিক্ষা পাই, পাই অনুপ্রেরণা। আমরা জানি, রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এই দুই মনীষীই হিন্দু নারীদের অন্ধকারাচ্ছন্ন বন্দীজীবনে প্রথম আলোর শিখাটি জ্বেলেছিলেন। তাঁরাই ছিলেন বাংলার নারী জাগরণের পথিকৃৎ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, মুসলিম নারীদের অন্তঃপুরে তাঁদের প্রজ্জ্বলিত আলোর শিখা ঠিকমতো পৌঁছাতে পারেনি। সেই অবস্থায় উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ পর্যন্ত মুসলিম সমাজপতিদের রক্তচক্ষু ও অন্যায় অনুশাসনকে উপেক্ষা করে সামাজিক রক্ষণশীলতার অচলায়তনকে ভেঙে নারীসমাজকে মুক্তির আলোয় উদ্ভাসিত করার লক্ষ্য নিয়ে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। পরবর্তী সময়ে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই বাংলার সকল নির্যাতিত ও মুক্তিকামী নারীর অন্তরে আজও অনন্যসাধারণ মহীয়সী নারী রোকেয়া প্রেরণার উৎস হয়ে আছেন। শতবর্ষের পরিক্রমায় আমরা খুঁজে পাই আরও অনেক নাম লীলা নাগ, সুফিয়া কামাল, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার প্রমুখ। তাঁদের প্রত্যেকের অপরিসীম অবদান ও ভূমিকার কথা আমাদের অজানা নয়।

এছাড়া ইতিহাসে এমন অনেক নারী ছড়িয়ে আছেন, যাঁরা কথাবার্তায়, চলাফেরায়, পোশাকে-আশাকে, নাচে-গানে সংস্কৃতিবান হওয়ার উদাহরণও তৈরি করেছিলেন। বাঙালি নারীরা যে আজ আধুনিকা হতে পেরেছেন, তার পেছনে আরও বহু নারীদের ভূমিকা ও অবদান রয়েছে। তাঁদের পদযাত্রার ধ্বনি একুশ শতকেও যেন প্রতিধ্বনিত হয়ে চলেছে। সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বৈষম্যপূর্ণ অবস্থানের বিরুদ্ধে এগিয়ে যেতে আমরা তাঁদের মাধ্যমে এখনও অনুপ্রাণিত হই। অনুপ্রাণিত হই নারী-পুরুষের সম-অধিকারের সংগ্রামকে এগিয়ে নিতেও।

“মাতা ভগিনী, কন্যে! আর ঘুমিও না, উঠো” – প্রায় শত বছর আগে রোকেয়া সাখাওয়াতের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের নারীরা এখনও যেন জেগে উঠছে। তারা ক্রমাগতভাবে সংগঠিত হচ্ছে। ঘরের কোণ থেকে বেরিয়ে এসে বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছে। নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করছে। অন্যের ভাগ্যোন্নয়নেও সহায়তা করছে। কূপমণ্ডুকতার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার কাজে অবদান রাখছে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য হাল ধরেছে। আর সেইসব বলিষ্ঠ ও সুন্দর মনের বিভিন্ন বয়সের নারীদের নিয়েই আমাদের ভিন্ন এক প্রচেষ্টা। এই প্রয়াসের মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন নারী জীবন আরও ধন্য ও সুসমৃদ্ধ হবে, অন্যদিকে তারা দেশ ও মানুষের জন্যও আরও বড় অবদান রাখার একটি বিশ্বস্ত ক্ষেত্র খুঁজে পাবে।

আরও পড়ুন:  গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে গভীর সংকটে পড়বে সাংবাদিক সমাজ

আমরা আর্থিকভাবে খুব ছোট প্রতিষ্ঠান হলেও আমাদের মনে হয় মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থনের মাপকাঠিতে আমরা খুবই সমৃদ্ধ একটি সংগঠন। এটাই আমাদের শক্তি। আমরা এই শক্তি আরও বাড়াতে চাই। আমরা সকলের আরও সমর্থন ও সহযোগিতা চাই।

লেখক: মো: আলমগীর কবির, প্রধান সমন্বয়ক গ্রীন ভয়েস ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাপা।

spot_img

সংবাদ সারাদেশ

ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ গ্রীন ভয়েসের ৭ দাবি

পরিবেশ সুরক্ষায় পুরনো যানবাহনের ব্যবহার বন্ধ করা ও কালো ধোঁয়া নির্গমন ঠেকাতে ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ ৭ দফা...

জানাক ও বৈষম্যবিরোধীর নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে আসছে নতুন একটি রাজনৈতিক দল। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ...

কুয়েট উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের নিন্দা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের পাবলিক...

ইটভাটায় কাজে গিয়ে নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

মাদারীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরে একটি ইটভাটায় কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কোলচুরি গ্রামের ১৯...

Discover more from bartabulletin.com

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading