মাস খানেক পরেই মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা বা কুরবানী ঈদ। কুরবানীর ঈদকে উপলক্ষে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন গরুর খামারিরা। এরই মধ্যে দিনাজপুরের বাজারে দেখা মিলেছে জেলার সবচেয়ে বড় গরুর। ফ্রিজিয়ান জাতের এ গরুর নাম রাখা হয়েছে ‘ত্যাগ’। ত্যাগের মাধ্যমে যেহেতু কুরবানী দিতে হয় তাই এমন নাম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গরুটির মালিক। গরুটির ওজন প্রায় ২৫ মণ। বিশালাকৃতির এ গরুটির মালিক দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর গোবিন্দপুরের আকবর আলী। গরুটিকে দেখতে প্রতিদিন উৎসুক জনতা গিয়ে ভীড় করে তার বাসায়।
গরুর মালিক আকবর আলী জানান, কোরবানির উদ্দেশ্যেই তিনি গরুটিকে লালন-পালন করছেন। এ কারণেই নাম রেখেছেন ‘ত্যাগ’। কোরবানির হাটে তোলার পর ন্যায্য মূল্যে পেলে তিনি গরুটি বিক্রি করতে চান এবং আগামীতে আরও বড় গরু পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শখের বশে ছোট আকারে একটি গরুর খামার করেছিলেন আকবর আলী। সাদা-কালো রঙের ‘ত্যাগ’ সেই খামারেই বেড়ে উঠেছে। ‘ত্যাগ’সহ খামারের অন্যান্য গরুর দেখভাল করেন তার স্ত্রী নাসিমা বেগম। গরুটির নামও তিনিই দিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্রিজিয়ান জাতের গরু ‘ত্যাগে’র উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, লম্বায় সাড়ে ১১ ফুট। জেলার সবচেয়ে বড় গরু দেখতে প্রতিদিনই আকবর আলীর বাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। নিজের কাছাকাছি মানুষ দেখলেই রাগে ফুঁসে ওঠে ‘ত্যাগ’। তবে নাসিমাকে দেখলেই শান্ত হয়ে যায়।
আকবর আলীর স্ত্রী নাসিমা বেগম জানান, তাদের খামারে ‘ত্যাগ’সহ পাঁচটি গরু আছে। প্রতিটি গরুকে নিয়ম মেমে খাবার খাওয়ানো ও পরিচর্যা করা হয়। ডাল, ভুট্টা, খৈল, ঘাস ও খড়ের মতো প্রাকৃতিক খাবারই খাওয়ানো হয় গরুগুলোকে। কোনো ধরনের ইনজেকশন বা স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়নি। ত্যাগের ওজন হবে ১১০০ কেজির বেশি।
তিনি আরো জানান, দুই বছর আগে তার স্বামী ‘ত্যাগ’কে নিয়ে আসেন। তখন এটি বাছুর ছিল। গত বছর পাকিস্তানি সিন্ধি ও ব্রাহাম জাতের দুটি বাছুরও কেনা হয়। এরপর থেকেই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতি ও প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে যত্ন সহকারে লালন-পালন করা হচ্ছে পশুগুলোকে। এখন ‘ত্যাগে’র বয়স চার বছর। এ পর্যন্ত গরুটির খাবার ও পরিচর্যায় ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা।
দিনাজপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশকা আকবর তৃষা জানান, জেলায় এ বছর ৫৮ হাজার ৫৫ জন খামারি কোরবানি উপলক্ষে এক লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩টি পশু লালন-পালন করছেন। এর মধ্যে জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৫৪ হাজারের বেশি পশু অন্য জেলায় পাঠানো যাবে।
তিনি আরো জানান, আকবর আলীর মতো জেলার অন্য খামারিরাও একদম প্রাকৃতিক ও নির্ভেজাল পদ্ধতিতে পশুগুলোকে লালন-পালন করছেন। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ক্রেতার সংখ্যা কম হতে পারে। ‘ত্যাগে’র মতো জেলার আরো অনেক গরু আছে। এগুলোকে অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা চলছে। এছাড়া খামারি চাইলে তার গরু ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকায় নিতে পারবেন।
গরুর মালিকের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে- ০১৭৭৭-৭৬১৮৬১
বার্তাবুলেটিন/এ.মান্নান/দিনাজপুর
You must be logged in to post a comment.