ঢাকারবিবার , ১৫ মে ২০২২
  1. আনন্দধারা
  2. আন্তর্জাতিক
  3. ইসলাম ও জীবন
  4. কৃষি ও অর্থনীতি
  5. ক্যাম্পাস
  6. খুলনা
  7. খেলাধুলা
  8. গল্প ও কবিতা
  9. গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব লিংক
  10. চট্রগ্রাম
  11. চাকুরী বার্তা
  12. জনমত
  13. জাতীয়
  14. ঢাকা
  15. পরিবেশ ও বিজ্ঞান

বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ও গবেষণা ভাবনা

বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পর, বিধ্বস্ত অবকাঠামো ও অর্থনীতি নিয়ে, বাঙালি জাতির উন্নতির জন্য আধুনিক শিক্ষা চালু করাই ছিল অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বঙ্গবন্ধু জানতেন, ঘরে ঘরে আধুনিক শিক্ষা পৌঁছে দিতে না পারলে এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আদর্শ মানবসম্পদ গড়ে তোলাই ছিল বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শনের মূল বিষয়। তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার এবং ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে সবার জন্যই শিক্ষার সমান সুযোগ থাকা আবশ্যক। আর এ কারনে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন বক্তব্য, নীতি ও কর্মকাণ্ডের মধ্যে শিক্ষা বিষয়ে তার চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন তথ্য, দলিল ও প্রকাশনার পর্যালোচনা করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়।

স্বাধীনতার পর পাকিস্তান থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে হতাশ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালের ৩০ মার্চ, চট্টগ্রামে শিক্ষক ও লেখকদের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় অনুশোচনা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিকশিত মানুষ সৃষ্টির পরিবর্তে এটি শুধু আমলা তৈরি করছে। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে না পারলে সমাজ থেকে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূর করা যাবে না এবং সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। গ্রামীণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কিছু দিন করে গ্রামাঞ্চলে কাটানোর পরামর্শ দেন তিনি। বঙ্গবন্ধু আভাস দেন, দেশের টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে, যা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। ত্রে প্রাপ্ত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে হতাশ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালের ৩০ মার্চ, চট্টগ্রামে শিক্ষক ও লেখকদের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময় অনুশোচনা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিকশিত মানুষ সৃষ্টির পরিবর্তে এটি শুধু আমলা তৈরি করছে। তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে না পারলে সমাজ থেকে দারিদ্র্য এবং বৈষম্য দূর করা যাবে না এবং সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। গ্রামীণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কিছু দিন করে গ্রামাঞ্চলে কাটানোর পরামর্শ দেন তিনি। এসময় তিনি দেশের টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করার আভাস দেন।

আরও পড়ুনঃ  হাবিপ্রবিতে ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবন পরিকল্পনা শীর্ষক প্রশিক্ষণ

এরই প্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালে ড. কুদরাত-ই-খোদাকে প্রধান করে বঙ্গবন্ধু একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন, যার প্রধান কাজ ছিল চলমান শিক্ষাব্যবস্থাকে মূল্যায়ন করা এবং সত্যিকারের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য যথাযথ শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের ব্যাপারে সুপারিশ করা। এই কমিশন ১৯৭৩ সালের জুন মাসে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন এবং ১৯৭৪ সালের মে মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। বাংলাদেশ শিক্ষা কমিশন প্রতিবেদন শিরোনামে ৩০৯ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, যা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে সর্বাধিক বিস্তৃত কাজ, যেখানে শিক্ষা বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

তবে, এই কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই, শিক্ষা বিষয়ে নিজের দর্শন বাস্তবায়নের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল নাগরিকদের শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়। ১৯৭২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রেসনোটে বলা হয়, উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বাংলা ভাষাই হবে শিক্ষার মাধ্যম। ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ অন্য একটি প্রেসনোটের মাধ্যমে জানানো হয়, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বই পাবে এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা পাবে বাজার মূল্যের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম দামে। বঙ্গবন্ধুর সরকারের উদ্যোগে ৩৬ হাজার ১৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয় এবং বাড়ানো হয় শিক্ষকদের বেতন। এছাড়া নারীর উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নারীদের অবৈতনিক শিক্ষা চালু করার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ জারি করে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের মাধ্যমে, দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন চিন্তা ও মত প্রকাশের স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ফলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়, যেমন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ শুরু করে।

আরও পড়ুনঃ  বাকৃবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কুড়িকৃবি ভিসির শুভেচ্ছা

শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য অর্জনে শিক্ষার সঙ্গে গবেষণার বন্ধন সৃষ্টি করা দরকার বলে বঙ্গবন্ধু মনে করতেন। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সে দেশে পাঠিয়ে তাদের অর্জিত জ্ঞান ও গবেষণার অভিজ্ঞতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেন, যার সুফল আজও আমাদের দেশ পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু সব সময় বিশ্বাস করতেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শুধু

শিক্ষাদানের মধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখবেন না; বরং গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে মুখ্য ভূমিকা রাখবেন। এর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কর্মমুখী শিক্ষার উন্নয়নে গবেষণার ধারণাকে প্রাধান্য দিয়ে কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করেছেন। অর্থনৈতিক উন্নয়নে মানবিক গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণার যে নিবিড় মেলবন্ধন দরকার, তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষির উন্নয়নে গবেষণার বিকল্প যে আর কিছু হতে পারে না, তা বঙ্গবন্ধুর গবেষণামনস্ক পরিকল্পনা ও চিন্তাধারায় প্রতিফলন ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু গবেষকদের কৃষির উন্নয়নে সুষম ও সমন্বিত খাদ্য গবেষণার নতুন ধারণা দ্বারা প্রভাবিত করেছেন। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে গবেষণার উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করে তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় নিজেদের আত্মনিয়োগে প্রেরণা জুগিয়েছেন। কৃষি গবেষণার মাধ্যমে খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনে তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ইক্ষু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন। এগুলো তৈরির পেছনে বঙ্গবন্ধুর গবেষণার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের দর্শন ও চিন্তা কাজ করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল সফল রাজনীতিবিদ ছিলেন না; বরং বহুমাত্রিক নতুন ধারণা উদ্ভাবনের মাধ্যমে সর্বজনীন দর্শন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল শক্তিও ছিলেন। তিনি নিজে বিজ্ঞানী না হলেও বিজ্ঞান ও গবেষণার নতুন ধারণা সৃষ্টিতে যেমন নিজের ভাবনাকে কাজে লাগিয়েছেন, তেমনি তার  গবেষণার ভাবনা দ্বারা মানুষকে তাড়িত করে নতুন নতুন গবেষক তৈরিতে ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর এ গবেষণা দর্শনকে ধারণ করে যদি আমরা নিজেদের গড়ে তুলতে পারি, তবেই দেশ এগিয়ে যাবে।

আরও পড়ুনঃ  হাবিপ্রবিতে দ্রুততম সময়ে উপাচার্য নিয়োগ চান গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ

লেখকঃ ড. এম আফজাল হোসেন
অধ্যাপক ও ইউজিসি  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলো

সর্বশেষ - ক্যাম্পাস

নির্বাচিত সংবাদ

অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে বিশ্ববিদ্যালয়কে লাল তারকা প্রদানের সিদ্ধান্ত

বাবা-মায়ের সাথে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানালেন কুড়িকৃবি উপাচার্য

গ্রীন ভয়েস

গ্রীন ভয়েস ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার নতুন কমিটি গঠণ

এলাকাবাসীর দাবি পূরণ, নির্মিত হচ্ছে মাইন বিস্ফোরনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিস্তম্ভ

গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে টার্নিটিনের মতো সফটওয়্যার তৈরির আহ্বান

দোয়া ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে হাবিপ্রবিতে প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উদযাপন

সমাজ ব্যবস্থায় অনিয়ম-দুর্নীতি যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে: জিএম কাদের

করোনা সচেতনতায় ৬৫ কি.মি পথ পাড়ি দিয়ে হাবিপ্রবি গ্রীন ভয়েসের মাস্ক বিতরণ

ভিসিময় বিশ্ববিদ্যালয়!

ইউজিসির অভিন্ন নীতিমালার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হাবিপ্রবি শিক্ষকদের