দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান, কমিশনারই অর্থ পাচারে জড়িত

প্রকাশ:

Share post:

সরকারবিরোধী ব্যক্তিদের দমন করতে অনেক সময় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-কে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান, কমিশনার এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারে জড়িত থাকার তথ্যও পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অর্থ পাচারে জড়িত সাবেক দুদক কমিশনারদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা উচিত এবং তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন।

গত কয়েক বছরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলের অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছে দুদক। এসব মামলায় খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি এ সব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা তৈরির জন্য কাজ করেছেন এবং অনেক ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেল করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়েছেন। এ ধরনের চক্রের মধ্যে দুদকের কয়েকজন কর্মকর্তা এবং একজন প্রভাবশালী আইনজীবী জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, দুদকের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন যে, এটি প্রথমবারের মতো যে কোনো দুদক কমিশনারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে। সাবেক কমিশনার জহুরুল হকের বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এবং দুদক ও বিটিআরসিতে কর্মরত থাকার সময়ে অর্জিত অবৈধ সম্পদ সেখানকার ব্যাংকে পাচার করেছেন। একইভাবে, সাবেক কমিশনার আছিয়া বেগমের স্বামীও দুর্নীতি করে বিপুল অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া, এক সময়ের পিএসসির গাড়িচালক আবেদ আলীর অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান থামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, যেখানে আছিয়া খাতুনের ভূমিকা ছিল। এই চক্রের সহায়তায় দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেওয়ার কাজে সহায়তা করেছেন বলে জানা গেছে।

জহুরুল হক বিটিআরসি চেয়ারম্যান থাকাকালে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের তরঙ্গ বরাদ্দে দুর্নীতি এবং বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানিকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ২০২১ সালে দুদক কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর একাধিক বিতর্কে জড়ান এবং ২০২২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে। উদাহরণস্বরূপ, তাঁর নিজ নামের ৫ কাঠার প্লট পরিবর্তন করে ১০ কাঠা প্লট দাবি করা এবং রাজউকের সিদ্ধান্তে সেই প্লট বরাদ্দ পাওয়া যায়। তবে, আইন অনুযায়ী, স্বামী-স্ত্রী আলাদাভাবে প্লট বরাদ্দ পেতে পারেন না। কিন্তু জহুরুল হক এবং তাঁর স্ত্রী মাছুদা বেগম একাধিক প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন এবং সেগুলোর কোনো সমর্পণও হয়নি।

আরও পড়ুন:  ফুলবাড়ীতে জানালার গ্রীল কেটে বাসায় ঢুকে ডাকাতি, শ্বাসরোধে একজনকে হত্যা

এছাড়া, জহুরুল হকের জন্য একাধিক গাড়ি বরাদ্দের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ। যেহেতু দুদকে গাড়ির অভাব ছিল, অনেক কর্মকর্তা শেয়ার করে গাড়ি ব্যবহার করতেন, সেখানে এক কমিশনারের জন্য অতিরিক্ত গাড়ি বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।

এ সব ঘটনায় দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং কর্তৃত্বের অপব্যবহারের যে চিত্র ফুটে উঠেছে, তা দুর্নীতি দমন কমিশনের নিজস্ব পরিচালনায়ও বড় ধরনের প্রশ্ন তুলে ধরেছে।

spot_img

সংবাদ সারাদেশ

ফুলবাড়ীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ

বিপুল মিয়া,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম )প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে শিক্ষক- কর্মচারী নির্যাতন ও হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।...

শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিনকে সংবর্ধনা ও প্রকাশনা উৎসব

বিপুল মিয়া,বার্তাবুলেটিন: বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিনকে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। একই অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সংকলন ‘The...

ফুলবাড়ীতে আইনগত সহায়তা দিবস-২০২৫ পালিত

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে দ্বন্দ্বে কোন আনন্দ নাই, আপোষ করো ভাই, লিগ্যাল এইড আছে পাশে, কোন চিন্তা...

ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ গ্রীন ভয়েসের ৭ দাবি

পরিবেশ সুরক্ষায় পুরনো যানবাহনের ব্যবহার বন্ধ করা ও কালো ধোঁয়া নির্গমন ঠেকাতে ফিটনেস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করাসহ ৭ দফা...

Discover more from bartabulletin.com

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading