বলিউড ও বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, যিনি ষাটের দশকে ভারতীয় বাংলা সিনেমা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, আজও চলচ্চিত্র জগতের স্মরণীয় একটি নাম। পরবর্তীতে হিন্দি সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে নিজের অবস্থান সুসংহত করেন। অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্না ও ধর্মেন্দ্রের মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করে নিজের প্রতিভা ও দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।
বর্তমানে ৭৬ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ অভিনেত্রী অভিনয়ে খুব বেশি সক্রিয় না হলেও মাঝে মাঝে বড় পর্দায় তার উপস্থিতি দর্শকদের আনন্দিত করে। সম্প্রতি তিনি ‘আড়ি’ নামক একটি বাংলা সিনেমায় কাজ শুরু করেছেন, যার শ্যুটিং চলছে কলকাতায়। এই সিনেমার কাজের সূত্রেই মুম্বাই থেকে কলকাতায় আসেন তিনি এবং সেখানেই স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তার নতুন কাজ ও অভিজ্ঞতার গল্প শোনার জন্য ভক্তদের আগ্রহের কমতি নেই।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে মৌসুমী তার দীর্ঘ ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলাপ করেন। নিজের প্রেম জীবন ও দাম্পত্য জীবন নিয়েও অকপটে ভাগ করে নেন নানান আবেগ-অনুভূতির কথা।
বেশ অল্প বয়সেই বিয়ে হয়েছে এই অভিনেত্রীর। সে প্রসঙ্গ নিয়ে সাক্ষাৎকারে প্রশ্নের সম্মুখীন হন তিনি। এ সময় মৌসুমী চ্যাটার্জি বলেন, ‘সবই অল্প বয়সে হয়েছে আমার। আমি কি এমনি এমনি নষ্ট হয়েছি? ‘বালিকা বধূ’ নিয়ে একটা গল্প বলি। সন্ধ্যা রায়ের জন্য ‘বালিকা বধূ’ ঠিকঠাক হয়েছিল। তরুণ মজুমদার দু’বার বলেছিলেন ‘বন্ধ করে দাও।’ আমি তখন খুবই ছোট। পর্দায় আমাকে কিশোরী দেখানোর জন্য আমাকে বাড়তি প্যাড দিয়ে পেটিকোট পরানো হয়েছিল। প্যাক-আপের পর সেখানেই, পরিচালকের সামনে পোশাক খুলতে আরম্ভ করেছি। ছোট তো, বুঝিনি কিছু। সে সব দেখে তরুণ মজুমদার চিৎকার করে বলে, ‘এই এই ওকে ভিতরে নিয়ে যাও।’ সে কী কাণ্ড! আমি ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেছি। আমি তো তখন কিছুই জানি না।’
প্রেম জীবন প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, ‘আমি তো সব সময় প্রেম করি। আমার বর, আমি দুজনেই খুব রোম্যান্টিক মানুষ। আমার বর তো বিয়ের পরেও প্রচুর প্রেম করেছে। আমি তো প্রেম করার সময় পাইনি। তবে ফ্লার্ট করেছি প্রচুর। শাবানা আজমি তো আমাকে বলেছেনই, ছয় বছর হোক কি ষাট বছর, মৌসুমী সবার সঙ্গে ফ্লার্ট করে যাবে।’
১৯৬৭ সালে তরুণ মজুমদারের ‘বালিকা বধূ’ সিনেমার মাধ্যমে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আত্মপ্রকাশ করেন মৌসুমী। পরে বলিউডে যাত্রা করেন। সত্তর দশকে বলিউডের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রীদের অন্যতম এই অভিনেত্রী।