সহকারি পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ) এর প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সমাপনী কুচকাওয়াজে ৩৮ তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের ৩ জন ও ৪০ তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের ৫৭ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন।
আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.),উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন। এ সময় মঞ্চে তার সাথে ছিলেন বাহারুল আলম, বিপিএম, আইজিপি ও জনাব মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, বিপিএম-সেবা, প্রিন্সিপাল (অ্যাডিশনাল আইজিপি), বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহী। বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী প্রশিক্ষণার্থীরা হলেন এএসপি (প্রবি-৫৭) জনাব মোঃ রুহুল আমিন লাবু (Best Probationer, Best Academic & Best Shooter) এবং এএসপি (প্রবি-৬৩) জনাব এম. সায়েলিন (Best in field Activities & Best in Horsemanship).
বর্নাঢ্য এ প্যারেড অনুষ্ঠানে মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক, এনডিসি, পিএসসি, জিওসি, ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, বগুড়া এরিয়া, বগুড়া সেনানিবাস, বগুড়া; অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ জাওয়াদুল হক, উপাচার্য, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী; জনাব খোন্দকার আজিম আহমেদ, এনডিসি, বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী; জনাব আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম), বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকা; জনাব মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, পুলিশ কমিশনার, আরএমপি, রাজশাহীসহ বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও আরো অনেক স্থানীয় সম্মানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার ভাষণে নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালনের জন্য বলেন। থানায় এসে মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেই দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। জুলাই ও আগস্ট ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে সেই চেতনাকে ধারণ করে পুলিশ বাহিনীর গৌরবকে আরো সমুন্নত রাখার পরামর্শ প্রদান করেন। নবীন কর্মকর্তাদের কোন দলের আজ্ঞাবহ হয়ে কোন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা তাদের অনায্য ও অন্যায় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে অপেশাদার আচরণ ও বেআইনি কাজ না করার জন্য বলেন। নবীন কর্মকর্তাদের নিকট সমাজে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধ পরিকর হয়ে প্রজাতন্ত্রের নাগরিক হয়ে ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য সেবা প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সকল নাগরিকের, কোন দলের নয়, কোন গোষ্ঠীর নয়, কোন সম্প্রদায়ের নয়। বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, যাঁরা সুনির্দিষ্ট আইন মেনে চলেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবে। তারা কোন দলের তল্পিবাহক হয়ে কোন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা তাদের অনায্য ও অন্যায় নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে অপেশাদার আচরণ ও বেআইনি কাজ করবেনা- আজকের এই সমাপণী অনুষ্ঠানে আপনারা এই শপথে বলীয়ান হবেন, এই আশাবাদ ব্যক্তি করছি।
তিনি আরো বলেন, আজ আপনাদের এই এক বছর ব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণের শেষ দিন। আজ থেকে আপনারা সুপ্রশিক্ষিত এক ঝাঁক মেধাবী, চৌকস পুলিশ অফিসার হয়ে মাঠ পর্যায়ে সরাসরি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, নাগরিকের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, আপনাদের এই নতুন কর্মজীবনে স্বাগত জানাচ্ছি। আজকের এই সমাপণী অনুষ্ঠানের মাহেন্দ্রক্ষণে সুনিপণ কুচকাওয়াজ উপহার দেওয়ায় আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের এক বছর ব্যাপী এই কঠোর মৌলিক প্রশিক্ষণে যাঁরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি ও কর্মজীবনের নতুন প্রাঙ্গণে আপনাদের সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।