বাপা প্রেসবিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন ও নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদ এর যৌথ উদ্যোগে “আদি বুড়িগঙ্গা নদী ও কালুনগর খাল উদ্ধার ও খনন করে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করার” -দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ শনিবার সকাল ১০.০০টায় লালাবাগ থানার সামনে বেড়িবাঁধ, ঢাকায় উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস এর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সুমন এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বাপা’র নির্বাহী সদস্য ড. হালিম দাদ খান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, পবা’র সদস্য মো. সেলিম, নবাব বাগিচা সামাজিক উন্নয়ন কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম আজম, সভাপতি নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, বাপা জাতীয় পরিষদ সদস্য ও গ্রীন ভয়েসের সমন্বয়ক মোনছাফা তৃপ্তি ও নাজনীন তিতলি, সিডিপি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, এডওয়ার্ড এ মধু প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দল এর নেতা মো. ফরিদ উদ্দিন সোহেল, বিশিষ্ট সমাজ সেবী রুস্তম খান, গ্রীন ভয়েস রংপুর কারমাইকেল শাখার সদস্য সুমাইয়া নুর, বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চার সদস্য মো. সেলিমসহ স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী, নদী কর্মী ও সামাজিক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে মিহির বিশ্বাস বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা নদীকে যারা খাল বা চ্যানেলে রুপান্তর করেছে এবং এটা চ্যানেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তাদের খুঁজে বের করে প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে এটি রক্ষা করা সম্ভব না। ঢাকা শহরের ২ কোটি মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে যারা তামাশা করছে তাদেরকে কোনভাবেই ছাড় দেওয়া যাবেনা। তাদেরকে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। আমরা মনেকরি নদী দখল-দূষণ রোধে জনগণ এবং সরকারের পাশাপাশি মহামান্য উচ্চ আদালতের রয়েছে প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। জনগণের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা, পূর্বাপর সরকারী সিদ্ধান্ত ও দেশের প্রচলিত আইনকে যথাযথভাবে অনুধাবন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কেবলমাত্র নদী উদ্ধার ও সংরক্ষণ সম্ভব। তিনি ব্লু নেট টিমের কাজকে তরান্বিত করার তাগিদ দেন।
ড. হালিম দাদ খান বলেন, দেশের নদীগুলো এখনও দূষণ ও দখলকারিরা নিয়ন্ত্রণ করছে। অন্তবর্তীকালীন সরকার থাকা কালীন সময়ে দেশের নদী রক্ষা করা না গেলে রাজনৈতিক সরকারের সময় রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
গাউস পিয়ারী বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা নির্মোহভাবে ও সম্পূর্ণ দখলমুক্ত ও পুনঃখনন করতে হবে এবং এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ঢাকার সকল নদী ও খাল উদ্ধার করে নৌপথ চালু করলে ঢাকা শহর যানযট ও বায়ুদূষণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
হুমায়ুন কবির সুমন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ওয়াসা, অন্যান্য কলকারখানা এবং গৃহস্থালীর ময়লা কোন রকম ট্রিটমেন্ট ছাড়া যেন নদীতে না ফেলা হয় সেটির তদারকি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
মো. সেলিম, হাজারিবাগ থেকে রায়ের বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার বন্ধ খালটিকে উম্মুক্ত করে নৌপথ চালু করার দাবি করেন। তিনি বলেন আমরা এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা এখানে একসময় বহমান নদী ছিল কিন্তু এক শ্রেণীর লোভী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লোভের শিকার হয়ে সেই নদী ও কালুনগর খাল বন্ধ হয়েগেছে।
মিজানুর রহমান আদি বুড়িগঙ্গা নদী দখল মুক্ত করে নৌপথ ও ওয়ার্কওয়ে চালু করতে হবে। এবিষয়ে অবলিম্বে সকল প্রতবিন্ধকতা দূর করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হব।
আজকের মানববন্ধন থেকে আদি বুড়িগঙ্গা রক্ষায় নিম্নলিখিত দাবিসমুহ উত্তাপন করা হয়:
১। আদি বুড়িগঙ্গা নদীকে উদ্ধার ও খনন করে এটিকে খাল কিংবা ঝিল নয় নদী হিসাবেই স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দিতে হবে।
২। কালু নগর খাল দখলমুক্ত করে আদি বুড়িগঙ্গা নদীর সাথে সংযুক্ত করে নৌপথ চালু করতে হব।
৩। যথাযথভাবে নদী, সংশ্লিষ্ট খালসমূহ ও প্লাবন অঞ্চল চিহ্নিত করে দখলদারদের বিষয়ে উপযুক্ত ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪। রাজধানীর চারিদিকে চক্রাকার নৌপথ চালু করতে অবলিম্বে সকল প্রতবিন্ধকতা দূর করে চক্রাকার নৌপথ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হব।