আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশীয় সংস্কৃতিতে ধারণ করে ফুটবলের জয়গানে মাতিয়ে দিল তারা। ফুটবলই যে বিশ্বকে এক করতে পারে, সেই বার্তা উঠে এলো বারেবারে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল আল বায়াত স্টেডিয়ামের বাইরে। হলুদ জার্সি এবং পতাকা নিয়ে উল্লাসে স্টেডিয়ামের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইকুয়েডরের সমর্থকরা। অন্য প্রান্ত থেকে এগিয়ে আসছিলেন সাদা এবং সবুজ জার্সি পরিহিত কাতার সমর্থকরা।
নাচগান, ঢাকঢোলের শব্দের মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায়, বিশ্বকাপ শুরু হতে আর দেরি নেই। নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরেই শুরু হল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রথমেই দেখা যায় কাতারের শেখ, মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই কাতারের নিজেদের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। এরপর স্থানীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। পরবর্তীতে পুরো স্টেডিয়ামে কোরআন তেলাওয়াত ও এর অর্থ পড়ে শোনান উপস্থাপক।
একে একে গান ও বাদ্যের তালে স্থানীয় সংস্কৃতি তুলে ধরেন আয়োজকরা। পরের পর্বে পূর্ববর্তী বিশ্বকাপগুলোর গানের রিমিক্সের তালে নেচে ওঠে পুরো স্টেডিয়াম। যেখানে গানের সুরের সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বিশ্বকাপের মাসকটগুলোও মাঠজুড়ে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। ২০১০ বিশ্বকাপে কেনানের ওয়েভিন ফ্ল্যাগ গানের মাধ্যমে এই পর্ব শেষ হয়। তার পরেই বিশ্বকাপে ঐক্যের বার্তা শোনাতে শোনাতে হাজির হন হলিউডি অভিনেতা মর্গ্যান ফ্রিম্যান। তার সঙ্গে মঞ্চে প্রবেশ করে কাতারের বিশেষ ভাবে সক্ষম ঘানেম আল-মুফতাহ।
এরপরেই ড্রামের আওয়াজ ও নৃত্যের ঝংকার কাঁপন তুলেছে। অংশগ্রহনকারী ৩২টি দেশের পতাকা ও জার্সিতে পারফরমাররা মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। এবারের বিশ্বকাপের মাসকট লাইব ওড়ানোর পরই বিশ্বকাপের অফিশিয়াল থিম সং ড্রিমিং গাইতে থাকেন দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড বিটিএসের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য জাংকুক । তার সঙ্গেই এলেন কাতারের গায়ক ফাহাদ আল-কুবায়সি। এর আগের বিশ্বকাপে যে যে গানগুলি গাওয়া হয়েছিল, সেগুলি ফিরে এল।
১৯৯৮ বিশ্বকাপে রিকি মার্টিনের গাওয়া ‘ওলে, ওলে’ থেকে ২০১০ বিশ্বকাপে শাকিরার গাওয়া ‘ওয়াকা, ওয়াকা’, সবই শোনা গেল। আগের বারের বিশ্বকাপে যে সব ম্যাসকট ছিল, তাদেরকেও একে একে হাজির করানো হল।
এই গান শেষ হওয়ার পর কাতারের ফুটবল ইতিহাস তুলে ধরা হয়। যা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তুমুল হাততালিতে মেতে ওঠে স্টেডিয়াম। করতালির মাঝে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে কাতার বিশ্বকাপের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন কাতার ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান। সেই সঙ্গে শুরু হয় আতশবাজি।এ সময় পুনরায় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের বর্তমান ও পূর্ববর্তী সব মাসকট প্রবেশ করে। যার মাধ্যমে শেষ হয় বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
You must be logged in to post a comment.