সিদ্দিকুর রহমান শাহীন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে: বাবা হাবিলদার(অব:) জিয়াউর রহমানের বারো বছর চাকুরির সুবাদে রাদিফ হোসেন রুশোর লালমনিরহাট সদরে বেড়ে ওঠা আর পড়ালেখা করা। খুটামারা এলাকায় থাকতেন ভাড়া বাসায়। লালমনিরহাট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের রুশো একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।গত বছর ৫ আগষ্ট তিনি শহীদ হন। তখন থেকে বাবা মায়ের চোখের জল শুকাচ্ছে না। নাতীকে হারিয়ে নব্বই ছুঁই ছুঁই দাদা মোখলেছুর রহমানও বাকরূদ্ধ।
রুশোর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের বড়লই গ্রামে। রুশোর মা মোছা.রশিদা বেগম,একজন গৃহিনী। দাদা শুধু রুশোর ছবির দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। বাবা- মা দুজনেই বিষণ্ণ।
গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের দিন লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বাসভবনে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ওই বাড়ী থেকে অগ্নিদগ্ধ যে ছয়টি লাশ উদ্ধার করা হয় তার মধ্যে একজন রাদিফ হোসেন রুশো’র। অন্যরা হলেন, রাজিব,জনি,জোবায়ের,শাহরিয়ার তম্ময়, শ্রাবণ। ছেলে হারিয়ে বাবা জিয়াউর রহমান ১২ বছর চাকুরীর মেয়াদ থাকার পরেও অবসর নিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ফুলবাড়ীর গ্রামের বাড়ীতে চলে এসেছেন।
রুশোর মা মোছাঃ রশিদা বেগম জানান, রাফিদ হোসেন রুশোই একমাত্র ছেলে সন্তান ছিলেন। তাকে নিয়ে অনেক আশা ছিল। অনেক স্বপ্ন ছিল তার। রুশো ব্যারিস্টার হবার স্বপ্ন দেখত। সেটা আর হলো না। এখনো মনে হয়, রুশো, তাকে মা মা বলে ডাকছে।
বাবা মোঃ জিয়াউর রহমান জানান, তিনি যখন চাকুরিতে ছিলেন তখন কতবার যে ফোন দিত! সোনার ছেলে ছিলো রুশো। গত বছরের ৫ আগস্ট সোমবার রুশো সকাল থেকে অনেকবার ফোন দিয়েছিলো।
জিয়াউর রহমানের ভাষ্য,’সর্বশেষ আমাকে বিকালে ফোন দিয়ে জানালো,’বাবা আমি লালমনিরহাট জেলা পরিষদ থেকে বৈষম্যবিরোধী আনন্দ মিছিলে যাচ্ছি। আমার জন্য দোয়া করিও। সে কথায় ছিলো শেষ কথা’।