বার্তাবুলেটিন ডেস্ক: বিএনপির হাত খুন আর হত্যার রাজনীতির রক্তে রঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।আজ জেলা শহরের টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন,‘জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের খুনীদের পুরস্কৃত করেছেন, বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে দিতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। কিন্তু ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে তারা যতই মুছে ফেলতে চেয়েছে, ততই তারা নিজেরা মুছে গেছে এবং সংকুচিত হয়েছে।’
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ ।
ওবায়দুল কাদের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের কী খবর ? শুয়ে আছেন টাকার বস্তার ওপর। এই টাকা কোথায় থেকে আসে। আকাশে উড়ে, বাতাসে উড়ে। রংপুরে উড়ে, রংপুরের টাকা বরিশালে উড়ে। টাকা দিয়ে তারা লোক সমাগম করার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, টাকার কথা বলাতে মির্জা ফখরুলের ইজ্জতে লেগেছে। এখন পৈত্রিক সম্পত্তির হিসাব দেওয়া শুরু করেছে। বিএনপি শুধু দূর্যোগের কথা বলে, কিন্তু তারা একটি দূর্যোগ। মহা দূর্যোগের নাম বিএনপি। এই অপশক্তির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন, ‘টেমস নদীর ওপার থেকে ফরমায়েশ আসে, বিএনপির নেতা কর্মীরা খোয়াব দেখছেন। তাদের রঙ্গিন খোয়াব কর্পুরের মত উবে যাবে। হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান ২১ আগস্টসহ অন্যান্য হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড। দন্ড নিয়ে, রাজনীতি করবেন না বলে লন্ডনে পাড়ি জমানো তারেক রহমান টেমস নদীর ওপাড় থেকে ফরমায়েশ দিচ্ছেন। কোন দন্ডিত নেতাকে দেশের মানুষ মেনে নেবে না। দেশকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনা কে বাঁচাতে হবে। শেখ হাসিনা বাঁচলেই দেশ বাঁচবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করলেও হত্যা করতে সাহস করেনি, কিন্তু খুনি খন্দকার মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আর এই হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, বিএনপি আজ বিদ্যুতের কথা বলে। অথচ তারা ১৭-১৮ ঘন্টা লোডশেডিং দিত। বিদু্যুতের নাম করে খাম্বার ব্যবসা করেছে তারা। তারা সোয়া এক কোটি ভুয়া ভোটার করেছিল আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য। এখন তারা সেই দিবাস্বপ্ন দেখছে। তিনি বলেন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কত লোক হয়েছে, আসেন এবং দেখে যান। এটা বিভাগীয় কোনো সমাবেশ না, শুধু মহানগর ইউনিট। আপনাদের মতো ভাড়া করা লোক নেই এখানে। নির্বাচনে খেলা হবে ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন খেলা হবে, খেলা হবে। আন্দোলনে, নির্বাচনে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, ভোট জালিয়াতির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, যারা ১৭ কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদের বিরুদ্ধে।ভুয়া ভোটার বানানোর বিরুদ্ধে খেলা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খেলা হবে রাজপথে, খেলা হবে নির্বাচনে, খেলা হবে আন্দোলনে, খেলা হবে বিএনপির দু:শাসনের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, লাঠির আগায় জাতীয় পতাকা বেধে আন্দোলনের নামে লাল সবুজের পতাকার অবমাননা করেন। এই পতাকার অবমাননা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। ফাইনাল খেলা হবে ডিসেম্বরে। আসল খেলা হবে রাজপথে। দেশ বিরোধী অপশক্তির মোকাবিলা হবে। যারা মা বোনের বুক খালি করেছেন, তাদের সাথে মোকাবিলা হবে। যারা আগুন সন্ত্রাস করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে মোকাবিলা হবে। কোন অপশক্তির কাছে মাথা নোয়ানো হবে না, কোন অপশক্তিকে ছাড় দেয়া হবে না।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আবুল হাসেম খান এমপি, ডা. প্রান গোপাল দত্ত এমপি, নাসিমুল ইসলাম চৌধুরী নজরুল এমপি, এ্যারোমা দত্ত এমপি, কুমিল্লা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বাবুল প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আরফানুল হক রিফাত।